ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ইউরোপের ‘জেন জি’রা উগ্র ডানপন্থীদের প্রতি ঝুঁকছে কেনো?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৩৬, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১৪:৩৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

কয়েকটি ইউরোপিয়ান দেশের তরুণ ভোটারদের মধ্যে উগ্র ডানপন্থী রাজনিতিকদের প্রতি সমর্থন বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। বেশি নজর পড়ছে জার্মানির দিকে, যেখানে অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি বা এএফডি পার্টি ২২ সেপ্টেম্বর ব্র্যান্ডেনবার্গ রাজ্য নির্বাচনে জয়লাভ করার আশা করছে।

এ’মাসের শুরুর দিকে এএফডি থুরিঞ্জিয়া রাজ্য নির্বাচনে বড় বিজয় অর্জন করে। তারা ৩২.৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটদের ২৩.৬ শতাংশ থেকে অনেকে এগিয়ে ছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৯৪৫ সালে শেষ হবার পর এই প্রথম কোন উগ্র ডানপন্থী দল রাজ্য নির্বাচনে জয়লাভ করে।

“তরুণদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের প্রায় ৪০ শতাংশ, এএফডির পক্ষে ভোট দেয়,” বলছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেন অ্যান্সেল, যিনি “হোয়াটস রং উইথ ডেমোক্রেসি” নামে একটি পডকাস্ট হোস্ট করেন।

অন্য দিকে, ৭০ বছরের বেশি বয়স্ক ভোটারদের ৫ জনের মাত্র ১ জন এএফডিকে ভোট দেয়।

দলটি আশা করছে, আসন্ন ব্র্যান্ডেনবার্গ নির্বাচনে তরুণ ভোটাররা তাদের জয়ের পথে নিয়ে যাবে।

“অন্যান্য দল হয়তো ভেবেছিল যে, এএফডি শুধুমাত্র বয়স্ক লোকের পার্টি এবং তরুণরা এএফডিকে ভোট দেয় না। সেটা একেবারেই ভুল,” বলছেন ব্র্যান্ডেনবার্গ-এ এএফডি চেয়ারম্যান হ্যান্স-ক্রিস্টফ বারন্ডট।

তরুণদের মাঝে এএফডি’র জনপ্রিয়তার কারণ কী? অ্যান্সেল বলছেন, অভিবাসন মনে হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

“পূর্ব জার্মানিতে এএফডি আসলেই জনপ্রিয়,” তিনি বলেন। “দেশের এই অংশ অন্যান্য অংশের তুলনায় গরীব, তারা জাতিগত দিক থেকে কম মিশ্র। তাই তারা দেশের নতুন জাতিগত মিশ্রতা নিয়ে বার্লিন বা অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া দেখায়।”

“অনেকে যুক্তি দেখিয়েছে যে, এর পেছনে ইউক্রেনের যুদ্ধ একটি কারণ হতে পারে,” অ্যান্সেল বলেন। “অন্যরা বলেন এটা কোভিড-এর কারণে, বা আবাসন সঙ্কটের কারণে।”

ফ্রান্সেও জেন জি'র প্রভাব

তরুণ ভোটারদের মধ্যে এই ট্রেন্ড জার্মানিতেই সীমাবদ্ধ না। গত জুনের ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের নির্বাচনে ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মাঝে সব চেয়ে জনপ্রিয় ছিল এবং তাদের ৩২ শতাংশের ভোট পায় – যা ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ভোটারদের চেয়ে অনেক বেশি।

তরুণদের মাঝে জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ন্যাশনাল র‍্যালির ২৮-বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট জর্ডান বারদেলা’র ১৬ লক্ষ ফলোয়ার আছে।

“টিকটক হচ্ছে ক্ষুদ্র ভিডিও’র প্ল্যাটফর্ম, যা মানুষকে হতবাক করতে চায়। পপুলিস্ট দলগুলোর দক্ষতা হচ্ছে, এই ধরনের ভিডিও বানিয়ে - যেগুলো ক্ষুদে, ধারালো এবং আলোড়ন সৃষ্টি করার মত – রাজনীতি সম্পর্কে মানুষকে উৎসাহী করা,” অ্যান্সেল বলেন।

একই সময়, এল পাইস পত্রিকার এক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, স্পেনে ১৮ থেকে ২৬ বছর বয়সী পুরুষ – যাদের জেনেরেশন জি বা ‘জেন জি’ বলা হয় – তারা মনে করে যে, কোন কোন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রের চেয়ে কর্তৃত্ববাদ বেশি ভাল হতে পারে। আর ৫৯ বছর এর বেশি বয়সী – যাদের ‘বেবি বুমার’ বলা হয় – তাদের মাঝে এই সংখ্যা ১০ শতাংশর কম।

কর্তৃত্ববাদের পক্ষে মতামত নারী ভোটারদের মাঝেও কম দেখা গেছে – অ্যান্সেল বলছেন এই ট্রেন্ড অন্য দেশেও দেখা গেছে।

“এটা সবচেয়ে পরিষ্কার ভাবে বেরিয়ে আসে পূর্ব এশিয়াতে – যে, তরুণ পুরুষরা রাজনৈতিকভাবে তরুণ নারীদের থেকে বেশ ভিন্ন ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় এটা খুবই লক্ষণীয়, যেখানে তরুণ পুরুষরা সরাসরি নারীবাদ-বিদ্বেষী গোষ্ঠীর পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু আপনি দেখবেন, ৩০ বছরের কম বয়সীদের মাঝে লিঙ্গ ভেদে এই বিশাল ব্যবধান সব দেশেই দৃশ্যমান হচ্ছে, এমনকি এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রেও,” তিনি বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মাঝে এই ট্রেন্ড-এর পুনরাবৃত্তি হবে কি না, তা হবে দেখার বিষয়। সাম্প্রতিক জনমত জরীপে দেখা গেছে, তরুণ ভোটারদের মাঝে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমালা হ্যারিসের সমর্থন রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে বেশি।

সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি